বিদায়ী বছর ২০২১ সালে সারাদেশে ২২ হাজার ২২২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ক্ষতি হয়েছে ৩৩০ কোটি ১৫ লাখ ৩৩ হাজার ১৯০ টাকা। ওই বছর ফায়ার সার্ভিস ৫৯৮টি নৌ-দুর্ঘটনা, ৮ হাজার ৬৪৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ও ১ হাজার ৬৬৫টি অন্যান্য দুর্ঘটনার উদ্ধার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। এসব দুর্ঘটনায় ১১ হাজার ৯৯৯ জন আহত ও ২ হাজার ৫৮০ জন নিহত হয়। একই বছর ফায়ার সার্ভিস সরকারি ৪ হাজার ৪৮৮টি ও বেসরকারি ১১ হাজার ৮৭৮টি প্রতিষ্ঠানে মহড়া দিয়েছে।
বহুতল ভবন পরিদর্শন করেছে ১ হাজার ১৭৪টি। ৮৮২টি বস্তিতে, ৭ হাজার ২৮১টি শপিংমল হাটবাজার, বিপণিবিতানে, ১ হাজার ৮৬৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, ৮৮৩টি বাণিজ্যিক ভবনে মহড়া দিয়েছে। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর জানিয়েছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে সারা দেশে ২ হাজার ২৭১টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৯ কোটি ২৭০ লাখ ৩ হাজার ২৫০ টাকা। দুর্ঘটনা কবলিত স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৭০ কোটি ১৫ লাখ ৩১ হাজার ৪১০ টাকার মালামাল।
একইভাবে ওই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সারা দেশে ২ হাজার ৩৮৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতি হয় ৫৯ কোটি ৬৮ লাখ ৩৩ হাজার ৯১৭ টাকা। উদ্ধার করা হয় আরও ১৮২ কোটি ৬০ হাজার ১০০ টাকার মালামাল। মার্চ মাসে ২ হাজার ৬৪৪টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি হয় ৩৯ কোটি ৬০ লাখ ১ হাজার ৫৮৫ টাকা। উদ্ধার করা হয় ১২৭ কোটি ৪১ লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ টাকার মালামাল। এপ্রিলে ২ হাজার ৮৬১টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি হয় ৪১ কোটি ৯৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯০৫ টাকা।
উদ্ধার করা হয় ১১৭ কোটি ৪১ লাখ ৩০ হাজার ৩৮৫ টাকার মালামাল। মে মাসে ২ হাজার ১৮১টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি হয় ৪৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৭ হাজার ১৫ টাকা। উদ্ধার করা হয় ১৪৭ কোটি ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৩৩০ টাকার মালামাল। জুন মাসে ১ হাজার ৫১৪টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি হয় ১২ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৫০৩ টাকা। উদ্ধার করা হয় ৯১ কোটি ৬৯ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ টাকা। জুলাই মাসে ১ হাজার ৩২টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১২ কোটি ১৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা।
উদ্ধার করা হয় ৫৪ কোটি ৪৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা। আগস্ট মাসে ১ হাজার ৯৬টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ৪ হাজার ৯১৩ টাকা। উদ্ধার করা হয় ২৭ কোটি ৩৯ লাখ ৭০ হাজার টাকার মালামাল। সেপ্টেম্বর মাসে ১ হাজার ১৭৪টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২০ কোটি ৯১ লাখ ৯৬ হাজার ৫২ টাকা। উদ্ধার করা হয় ৪৭ কোটি ৭২ লাখ টাকার মালামাল। অক্টোবর মাসে ১ হাজার ৩৩৪টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৮ কোটি ৮৯ লাখ ৯৬ হাজার ২৫০ টাকা।
উদ্ধার করা হয় ৪২ কোটি ৪২ লাখ ৩২ হাজার ৪০০ টাকার মালামাল। নভেম্বর মাসে ১ হাজার ৬৫৬টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৬ কোটি ৭১ লাখ ১৪ হাজার ২৫০ টাকা। উদ্ধার করা হয় ১৩১ কোটি ৪২ লাখ ৫২ হাজার টাকার মালামাল। ডিসেম্বর মাসে ২ হাজার ৭৬টি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি হয় ২৩ কোটি ৫৭ লাখ ৭২ হাজার ৫৫০ টাকা। উদ্ধার করা হয় ১০২ কোটি ৬৮ লাখ ৫৩ হাজার ৫০ টাকার মালামাল। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে তারা ১৯টি নৌ,
৭৬৭টি সড়ক ও ১৭১টি অন্যান্য দুর্ঘটনার উদ্ধার অভিযানে অংশগ্রহণ করেছে। এসব দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩৭ জন। আর নিহতের সংখ্যা ছিল ১৫৬ জন। ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫টি নৌ, ৭৮৪টি সড়ক ও ১১৫টি অন্যান্য দুর্ঘটনার উদ্ধারে অংশ নেয়। এসব দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৫৮ জন আহত ও ১৬৫ জন নিহত হন। মার্চ মাসে ২৫টি নৌ, ৭৫০টি সড়ক ও ১৬২টি অন্যান্য দুর্ঘটনার উদ্ধারে অংশ নেয়। এসব দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮২ জন আহত ও ১৮৪ জন নিহত হন।
এপ্রিল মাসে ৩০টি নৌ, ৭৫৯টি সড়ক ও ১১৭টি অন্যান্য দুর্ঘটনার উদ্ধারে অংশ নেয়। এসব দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৪৮ জন আহত ও ১৫৬ জন নিহত হন। মে মাসে ৫১টি নৌ, ৮৩০টি সড়ক ও ১৩৬টি দুর্ঘটনার উদ্ধারে অংশ নেয়। এসব দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৩১৩ জন আহত ও ১৯৭ জন নিহত হন। জুন মাসে ৪১টি নৌ, ৭০৭টি সড়ক ও ১৫২টি অন্যান্য দুর্ঘটনার উদ্ধারের অংশ নেয়। এসব দুর্ঘটনায় ৮৯৫ জন আহত ও ১৬৪ জন নিহত হন। জুলাই মাসে ৫৪টি নৌ, ৭১৫টি সড়ক ও ১১২টি অন্যান্য দুর্ঘটনার উদ্ধারে অংশ নেয়। এসব দুর্ঘটনায় ৯৭৯ জন আহত ও ২১২ জন নিহত হন।
আগস্ট মাসে ৮৩টি নৌ, ৫৭৪টি সড়ক ও ১৫৮টি অন্যান্য দুর্ঘটনার উদ্ধারে অংশ নেয়। এসব দুর্ঘটনায় ৯৯১ জন আহত ও ১৮০ জন নিহত হয়। সেপ্টেম্বর মাসে ১২৩টি নৌ, ৫৮৮টি সড়ক ও ১২৩টি অন্যান্য দুর্ঘটনার উদ্ধারে অংশ নেয়। এসব ঘটনায় ৬৭২ জন আহত ও ২৪১ জন নিহত হন। অক্টোবর মাসে ৬২টি নৌ, ৭৩১টি সড়ক ও ১৪১টি অন্যান্য দুর্ঘটনার উদ্ধারে অংশ নেয়। এসব ঘটনায় ৯৩৪ জন আহত ও ১৮৩ জন নিহত হয়। নভেম্বর মাসে ৬৯টি নৌ, ৭২৪টি সড়ক ও ১৫৯টি অন্যান্য দুর্ঘটনার উদ্ধারে অংশ নেয়। এসব ঘটনায় ৯৭০ জন আহত ৫৮৫ জন নিহত হয়েছেন।
ডিসেম্বর মাসে ৩৭টি নৌ, ৭১৫টি সড়ক ও ১১৯টি অন্যান্য দুর্ঘটনায় অংশ নেয়। এসব ঘটনায় ১ হাজার ২০ জন আহত ও ১৫৭ জন নিহত হন। গত বছরের ৮ই জুলাই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে ধ্বংস স্তূপ থেকে ৫৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। এ অগ্নিকাণ্ডে মোট ৫৬ জনের মৃত্যু হয়। ১২ই নভেম্বর সকালে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে তেলবাহী জাহাজ ওটি সাগর নন্দিনী-৩ এ পাম্প বিস্ফোরণে আগুন লাগে।
৫ই নভেম্বর সোয়ারীঘাটে একটি জুতার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৫ জনের মৃত্যু হয়। ২৩শে ডিসেম্বর সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৩ জনের প্রাণহানি হয়। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার বলেন, অগ্নি, নৌ, সড়কসহ অন্যান্য সকল দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কাজ করে। জীবন ঝুঁকি নিয়ে ফায়ার ফাইটাররা মানুষের সেবায় নিয়োজিত। আমাদের কার্যক্রম আরও বেশি জোরদার করার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।